বর্ণবিদ্বেষমূলক পোস্টের প্রতিবাদে বিশ্বের প্রথম সারির বেশ কিছু নামী সংস্থা ইতিমধ্যেই ফেসবুকে তাঁদের বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কোকা-কোলা থেকে হন্ডা, হার্শলে-র মতো ব্র্যান্ড ফেসবুকে তাঁদের বিজ্ঞাপন বর্জনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্ট-সহ ফেসবুকের কনটেন্ট ব্যবস্থাপনা নিয়ে চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল বিগত কিছু দিন ধরেই। ইতিমধ্যেই ৯০টিরও বেশি সংস্থা ফেসবুকে তাঁদের বিজ্ঞাপন বর্জন করার ঘোষণা করেছে। তার মধ্যে রয়েছে নামী-দামি বহু ব্র্যান্ড। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক চাপে রয়েছে ফেসবুক। ইতিমধ্যেই তাঁদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, এখন থেকে ঘৃণা এবং বর্ণবিদ্বেষমূলক পোস্টে বিশেষ লেবেল লাগাবে ফেসবুক কোম্পানি।
গত শুক্রবারই কোকা-কোলার মত ব্র্যান্ডের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা আগামী ৩০ দিন ফেসবুকে আর কোনও বিজ্ঞাপন দেবে না । সংস্থার এক কর্মকর্তার কথায়, “বিশ্বে বর্ণবিদ্বেষের কোনও স্থান নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় তো প্রশ্নই ওঠে না। এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ যাতে ভবিষ্যতে আর না হয়, তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলিকে পরবর্তীকালে আরও দায়িত্ববান এবং স্বচ্ছ হতে হবে।” কোকা-কোলা ছাড়াও হিন্দুস্থান ইউনিলিভারও তাদের বেশ কিছু পণ্যের বিজ্ঞাপন ফেসবুকে বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এছাড়াও আমেরিকার স্মার্টফোন সংস্থা ভেরিজন ফেসবুক ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন – বিশ্বজুড়ে সমস্ত স্টোর একেবারেই বন্ধ করে দিচ্ছে মাইক্রসফট
অন্যদিকে ইউজারদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ফেসবুকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়েছে ভাইবার কর্তৃপক্ষও ।তবে তাঁরা এখানেই থেমে না থেকে ফেসবুকের বিরুদ্ধে বড়সড় আন্দোলনে নামতে চলেছে তারা। পাশাপাশি ‘হেট স্পিচ’ থেকে ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বন্ধ করার জন্য অন্যান্য সংস্থাগুলিকেও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সংস্থার প্রধান বলেছেন, “বর্তমান বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ফেসবুক নিজেদের দায়িত্ববোধ, অবস্থান ও মনোভাব প্রকাশে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। হেট স্পিচ-কে কাজে লাগিয়েই বিপুল টাকার ব্যবসা করছে ফেসবুক।”
গত ২৫ মে আমেরিকার মিনিয়াপোলিস শহরে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে মানুষজন বিক্ষোভে সামিল হন। পরে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে ক্ষুব্ধ হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফেসবুক এবং ট্যুইটারে লেখেন, “লুটপাট শুরু হলে গুলিও শুরু হবে।” ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই বিতর্কিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ফেসবুক ও ট্যুইটারের উপরে রীতিমতো চাপ এসে পড়েছিল। আর এই চাপের মুখেই ফেসবুকের নীতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন জুকেরবার্গ। এই ঘটনার জেরে শুক্রবার ফেসবুক ও টুইটারের শেয়ারের দাম ৭ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে গিয়েছে ।
আরও পড়ুন – করোনা মহামারীর জেরে লোকসান, ভারতে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে টাটা গোষ্ঠী
তথ্যসূত্রঃ এই সময়