লাদাখ সীমান্তে সংঘাতের আবহাওয়ায় চিনকে কড়া বার্তা দিতে টিকটক (TikTok)-সহ ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। এ বার সেই একই পথে হাঁটতে চলছে আমেরিকা। ভারতের মতোই টিকটক-সহ একাধিক চিনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ ‘ব্যান’ করার ইঙ্গিত দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও সোমবার জানান, টিকটক-সহ একাধিক চিনা অ্যাপ ব্যান করার কথা ভাবছে তাঁরা ।
গত ১৫ ই জুন পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় সেনা সংঘাতকে কেন্দ্রে করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৫৯টি চিনা অ্যাপের ব্যবহার বন্ধ করে দেয় ভারত। তার মধ্যে রয়েছে অত্যন্ত জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটকও । ৩০ জুন কেন্দ্রের নির্দেশিকায়, জাতীয় তথ্য নিরাপত্তার স্বার্থেই অ্যাপগুলি বন্ধ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ওই নিষেধাজ্ঞার পর একদিনের মধ্যে গুগুল প্লে স্টোর থেকে সরে যায় অ্যাপগুলি। ভারতের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছিল আমেরিকা। এ বার তারাও সেই পথে এগোচ্ছে।
সোমবার এক সাক্ষাৎকারে মাইক পম্পেও (Mike Pompeo) বলেন, ‘আমি এখনই বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করছি না। কিন্তু, পুরো বিষয়টি আমাদের বিবেচনার মধ্যেই রয়েছে।’
তথ্যচুরির অভিযোগ টিকটকের বিরুদ্ধে নতুন নয়। ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ার আগে থেকেই মার্কিন কংগ্রেসের একাধিক সদস্য টিকটকের বিরুদ্ধে তথ্যচুরির অভিযোগ এনেছিলেন বলে জানা যায়। টিকটকের মাধ্যমে তথ্য চুরি করে চিন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি করতে পারে বলে অভিযোগও করেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘চিনের আইন অনুযায়ী, দেশের প্রতিটি কোম্পানিকে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির কথা মেনে চলতে হবে। দেশের তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে সাহায্য করতে হবে। তাই চিনের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ ব্যবহারকারী মার্কিন নাগরিকদের তথ্য বেজিংয়ের হাতে গেলে, তা আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক হবে।’
আরও পড়ুন – করোনায় আক্রান্ত হলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো, নিজেই জানালেন একথা
এদিকে, ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ার পরেই টিকটক ঘোষণা করে, কিছু দিনের মধ্যেই তারা হংকংয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেবে। নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন নিয়ে এসে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনের কোমর ভেঙে দিয়েছে জিনপিং প্রশাসন। নতুন আইনে সেন্সর করার পাশাপাশি গ্রাহকতথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠছে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, চিনা সরকার টিকটকের কাছে হংকংয়ের নাগরিকদের তথ্য চেয়েছিল বলে খবর। সে কারণেই তড়িঘড়ি সেখানে ব্যবসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিকটক।
অন্য দিকে, ভারতের পর ব্রিটেনও হুওয়াই কোম্পানির সঙ্গে ৪জি পরিষেবা চুক্তি ভাঙার পথে এগোচ্ছে বলে খবর। সব মিলিয়ে চাপ বাড়ছে জিনপিংয়ের সরকারের উপর। আগ্রাসী মনোভাবের কারণে সারা বিশ্বে দ্রুত কোণঠাসা হচ্ছে চিন।