বেইরুট বিস্ফোরণের পর, ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ে সোমবার ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। বিস্ফোরণের দায় মাথায় নিয়ে হাসানের মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যরাও গণহারে ইস্তফা দিলেন।
লেবাননের রাজধানী বেইরুটে ভয়ানক বিস্ফোরণ চাপে ফেলে দেয় লেবানন সরকারকে। নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যাওয়ায় সরকারের পদত্যাগের দাবি তীব্রতর হচ্ছিল। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এদিন লেবানন সরকার ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়। এদিন প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব লেবাননের রাষ্ট্রীয় টিভিতে নিজের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। এর পরপরই মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী দিয়াবের পথ অনুসরণ করে সকলে একসঙ্গে ইস্তফা দেন।
হাসান দিয়াবের মন্ত্রিসভার তিন সদস্য অবশ্য আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু গোটা মন্ত্রিসভার পদত্যাগের জন্য চাপ বাড়ছিল। অনেকেই লেবাননের নেতাদের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে, এই বিস্ফোরণের জন্য সরকারকে দায়ী করেন। সরকারের ইস্তফার দাবিতে রাজধানীর রাজপথে বিক্ষোভও শুরু হয়েছিল।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী দু’জনেই জানিয়েছিলে বন্দরের গুদামঘরে মজুত করে রাখা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে বেইরুটে ভয়ানক বিস্ফোরণ ঘটেছে। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট গুদামে মজুত রাখার জন্য ন্যূনতম যে সতর্কতা ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল, তা মানা হয়নি। যার জেরে ভয়ানক বিপর্যয় নেমে আসে লেবাননের রাজধানীতে। বিস্ফোরণের তীব্রতার কারণে একাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রেসিডেন্টের বাসভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও রেহাই পায়নি। বেইরুটের বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত দু’শোর বেশি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৪ হাজারেরও বেশি । মৃতের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গেই সরকারের পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়েছে।
লেবাননের সেনাবাহিনীর তরফে জানান হয়েছে, তারা ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ, আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভব নেই। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস জানিয়েছেন, এই সময় ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপক হারে জরুরি সাহায্য প্রয়োজন। শুধু খাবার নয়, থাকার জায়গাও দরকার। কারণ, অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। রাজধানী শহরে পানীয় জলের পরিষেবা ও বিদ্যুত্ পরিষেবা এখনও বিপর্যস্ত। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০০ কোটি ডলারের বেশি। জানা গিয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলায় লেবাননকে ২৫ কোটি ইউরো আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী।